আকাশ গাড়িতে উঠার পর ড্রাইভার গাড়ি চালাতে থাকে৷ কিছুক্ষণ
পর গাড়ি ব্রেক করে।
আকাশঃ কি হয়েছে, গাড়ি কেনো থামালে?
ড্রাইভারঃ স্যার, গাড়ির সাথে মনে হয় একটা মেয়ে ধাক্কা খেয়েছে।
আকাশঃ কিহ বলো, আবার মারা যায় নি তো?
ড্রাইভারঃ নাহ স্যার বেঁচে আছে। নেমে কি দেখবো।
আকাশঃ তোমার নামতে হবে না আমি গিয়ে দেখছি।
আকাশ গাড়ি থেকে নামে আর অন্য দিকে রাস্তার
আশেপাশে সব পাবলিক গুলো গুলো এসে এক সাথে
জড় হয়৷ এমনিতে কোন লোকের কিছু হলে পাবলিক খুব
কমই আসে আর কোন মহিলা পড়লে তো কোন কথাই নেই।
তার উপর ইরার মতো একটা সুন্দরী মেয়ে পড়লে তো,
কত পাবলিক আসবেই তা বলার বাহিরে। এখানে অনেক
লোকই এসেছে কে এক্সিডেন্ট হয়েছে তা
দেখতে নয় বরং অনেকে এসেছে ইরাকে দেখার
জন্য৷ রাস্তার সব লোক আকাশকে মারার জন্য আসে, কিন্তু
আকাশের পারসোনালিটি দেখে কেউ কাছে আসার সাহস
পায় নি। তাই অনেক কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে৷ অন্য দিকে
গল্পের নায়িকা কি করছে তা দেখে আসি। গল্পের নায়িকা
রাস্তার উপর বসে আছে আর.....
ইরাঃ ওহ মা গো, আমার পা টা ভেঙে দিলো গো। কোন
হাতির বাচ্চা আমার গায়ের উপর গাড়ি চালিয়ে দিলো। তোর
কখনো বিয়ে হবে না, আর যদিও হয় তোর বউ আজকেই
মারা যাবে দেখে নিছ তুই৷ ( চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে)
ইরা এতক্ষণ ধরে আকাশকে গালাগালি দিচ্ছিলো। আর আকাশ
সে গালাগালি মুখ বুঝে সয্য করেছিলো তার একটাই কারণে
ইরা কষ্ঠ আর ইরার পাগলামি সব কথা বার্তা দেখে আকাশ
এতক্ষণ চুপ করে ছিলো। অন্য আকাশ ইরার কাছে গিয়ে
চেক করতে থাকে, কোথায় আঘাতের কোন চিন্হ
আছে কি না৷ কিন্তু আঘাতের কোন চিন্হ পর্যন্ত নেই। তাই
আকাশ ইরার কাছে এসে হাত বাড়িতে দেয়৷ কিন্তু ইরা হাত
তো ধরতেই চায় নি। উল্টো নিজে নিজে উঠে৷
ইরাঃ আপনি কি অন্ধ যে, রাস্তা দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না।
আকাশঃ আসলে আপনি এতো সুন্দর যে, আপনাকে দেখার
পর থেকেই গাড়ি ব্রেক করতে ভুলেই গিয়েছি।
ইরাঃ কিহ, আমার সাথে মশকরা হচ্ছে, তুই জানিস আমি কেহ, কিহ
আমার পরিচয়।
আকাশঃ আপনি তো এখন ওহ নিজের পরিচয় আর ঠিকানা না
বললে আমি জানবো কি করে।
ইরাঃ আমার নাম হচ্ছে ইরা চৌধুরী৷ আর আমি.....
আকাশঃ কি হলো থেমে গেলেন কেনো?.
আপনি কি.....
ইরাঃ আপনি তো আমার অপরিচিত তাহলে আমি আপনাকে এই
সব কেনো বলছি।
আকাশঃ আসলে , আমি তো তাই ভাবছি৷
ইরা ঃ এরপর থেকে গাড়ি দেখে শুনে চালাবেন। আর একটা
কথা চোঁখ থেকে চশমা খুলে রাখেন, তাহলে রাস্তা
অনন্ত দেখতে পাবেন।
আকাশঃ রাস্তা আমি ঠিকই দেখতে পাই কিন্তু আপনি মনে
হচ্ছে আমার মুখটাই দেখতে পান নি।
ইরাঃ আপনার এই খরগোশ মার্কা মুখ আমার দেখার কোন
ইচ্ছে ওহ নেই। একটা কথা মনে রাখবেন যদি আপনাকে
আমি আমার আশে পাশে ওহ দেখি তাহলে.....
আকাশঃ তাহলে কি করবেন একটু তো বলে যান।
ইরাঃ কিছু না, এমনিতে আমার ভার্সিটিতে যেতে ধেরি হয়ে
যাচ্ছে, নয় তো আপনাকে আমি বুঝিয়ে দিতাম আমি কি
জিনিস।
আকাশঃ চিন্তা করবেন না, আপনার অপেক্ষায় থাকবো।
এই দিকে ইরা চলে যায়। অন্য ড্রাইভার বের হয়ে
আকাশকে বলে।
ড্রাইভারঃ স্যার, অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আকাশঃ হ্যাঁ, চলো।
আকাশ অফিসে এসে কাজ করতে থাকে। তবে আকাশ
কাজে একদম মন বসাতে পারছে না বার বার ইরার মুখ ভেসে
উঠছে৷ যার জন্য আকাশ অফিসে অন্য মনস্ক হয়ে আছে৷
এতে করে অফিসের সবাই বুঝতে পাচ্ছে না কি বলবে।
কেনো না আকাশ অনেক রাগী তাই কেউ কোন কথা
বলার সাহস ওহ পাচ্ছে না।
আকাশ শুধু মাএ বসে বসে ইরার কথা ভাবছে৷ অন্য দিকে
আকাশের বাবা অফিসে আসে। ওনি অফিসে এসে দেখে
আকাশ চেয়ারে বসে আছে আর বাকি লোক গুলো
নিজেদের মতো করে কথা বলেই যাচ্ছে। আকাশের
বাবা আসাতে সবাি দাঁড়িয়ে সালাম দেয়৷
আকাশের আব্বুঃ আকাশ, আকাশ। কথা বলছো না কেনো।
এই দিকে আকাশ তো নিজের জায়গায় থাকলে ওহ মন তো এখানে নেই,
তাই আকাশ ওর বাবার ডাকে সাড়া ওহ দিতে পারছে না৷
তাই ওর বাবা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে।
আকাশের আব্বুঃ কি ব্যাপার? কি হয়েছে ওর?
Bangla Love Story
কর্মচারিঃ জানি না স্যার আসার পর থেকেই এমন ভাবে বসে
আছে। এভাবে বসে থাকলে তো আমরা
প্রেজেন্টটেশন দিতে পারবো না।।
আকাশের আব্বুঃ আচ্ছা তোমরা দাও, আমি দেখতেছি।
কর্মচারী সব ধরণের কথা বলে শেষ। মিটিং শেষ তাই সবাই
যে যার মতো করে কেবিনে চলে আসে।
আকাশের আব্বুঃ আকাশ, এই আকাশ কি হয়েছে তোর?
আকাশঃ আব্বু আমি তো.....
আকাশের আব্বুঃ তুই কি?
আকাশঃ এই না না কিছু না। চলো তাহলে একটু ঘুরে আসি।
আকাশের আব্বুঃ এই তোর হয়েছেটা কি। তুই কাকে কি বলছিস।
আকাশঃ ওহ আব্বু তুমি। দিলে তো আমার সপ্নটা ভেঙে।
আকাশের আব্বুঃ কিহ, দুই সপ্ন দেখছিলি।
আকাশঃ দেখো আব্বু আমি বাড়িতে যাচ্ছি তুমি অফিস সামলাও।
আকাশ বের হয়ে যায়৷ অন্য দিকে আকাশ আব্বু তো
বুঝতেই পাচ্ছে না কি হচ্ছে ওনার সাথে। আকাশ বাড়িতে
এসে শুয়ে পড়ে। তার সাথে ইরার কথা ভাবতে ভাবতে।
আকাশঃ যে করেই হোক ওই মেয়েকে আমার করে
নিতেই হবে। আমি তো ওই মেয়েকে খুঁজে বের
করবোই।
এই দিকে ইরা বাড়িতে গিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর ইরার
বড় ভাই আর ভাবি দুজনই ইরার কাছে এসে বসে।
ভাবিঃ কি হয়েছে আমার মেয়েটার?
ভাইয়াঃ কি হয়েছে বল বোন আমার।
ইরাঃ ভাইয়া আজকে আমি মরতে মরতে বেঁচে গেলাম।
ইরার কথা শুনে ইরার ভাবি ইরাকে জড়িয়ে ধরে। কেনো না
ইরার ভাবির কোন সন্তান নেই৷ ওনি ইরাকে যে ছোট কাল
থেকেই মানুষ করে আসছে৷ ওনি ইরাকে নিজের
মেয়ের মতো দেখে। ইরা বাবা-মা ছোট কালেই মারা
যায়। এরপর ইরার ভাই বিয়ে করে। যাতে করে ইরার ভাবি ইরার
খেয়াল রাখতে পারবে। ঠিক তাই হলো, ইরার ভাবি ইরাকে
নিজের মেয়ের মতোই দেখে।
ইরাঃ দেখো না আমি ঠিক আছি৷ একটু ওই একটুর জন্য বেঁচে
গেলাম৷
ভাবিঃ কি হয়েছে একটু খুলে বল তো.
ইরাঃ আর বলো না, আমি ভার্সিটি থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। তখন
রাস্তা পার হতে গিয়েছিলাম, তখন একটা বজ্জাত লোক
অল্পের জন্য আমার গায়ের উপরে উঠিয়ে দিতো৷
ভাবিঃ তা তুই কি কিছু বলিছ নি ওনাকে৷
ইরাঃ ভাবি ওই লোকটা অনেক ইয়াং ছিলো। এই ধরো ২৭-২৮
বছর বয়স হবে৷
ভাবিঃ কিজ বলিছ, দেখতে কেমন রে।
ইরাঃ ভাবি তুমি ওহ না৷ এরপর যদি ওই লোকটাকে আমার সামনে
পাই তাহলে দেখাবো অনেক মজা।
ভাইয়া ঃ দেখিছ। এখন আমাকে রুমে যেতে হবে।
ইরাঃ ভাইয়া তোমাকে তো একটা কথা বলকে ভুলে গিয়েছি।
ভাইয়াঃ কি কথা?
ইরাঃ আমি চাকরি করবো!
ভাইয়াঃ চাকরি করবি তো ভালো কথা। আমাদের কোম্পানিতে
তোকে বসিয়ে দিবো৷
Bangla Love Story
ইরাঃ ভাইয়া আমি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেতে চাই আর
আমি চৌধুরী কোম্পানিতে চাকরির ইন্টারভিউ আছে ৩ দিন পর।
ওই পোস্টে বেতন ৪০ হাজার টাকা মাসে।
ভাইয়াঃ সামান্য এই কয়েকটা টাকার জন্য। তুই চাকরি করবি?
ইরাঃ আমি তো টাকার জন্য করছি না। নিজেকে প্রকাশ করার
জন্য।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২২
ভাইয়াঃ তবে ওখানে চাকরি না হলে কিন্তু আমাদের অফিসে
করতে হবে।
ইরাঃ ঠিক আছে তাই হবে।
এই দিকে পরের দিন ইরা ওর বান্ধবীদের সাথে ভার্সিটিতে
দেখা করে। ওখানে ওর ৩ জন বান্ধুবী ছিলো। ওরা গল্প
করছিলো, তখন ওদের পাশে ইরা ওহ এসে বসে৷
ইরাঃ কিরে সাতচুন্নি, তোরা আমাকে একা একা পেলে কি
ফুঁসুর ফুঁসুর করছিস?
নদীঃ রোজা ওর প্রেম কাহিনি বলছে।
ইরাঃ কিরেহ রোজা কথাটা কি সত্যি।
রোজাঃ হ্যাঁ, রেহ৷ তাছাড়া তুই প্রেমের কি বুঝবি, তুই তো
কখনো প্রেমই করিছ নি৷
কথাটা বলেই রোজা ওহ নদী ওরা দুজনেই হাঁসতে থাকে৷
এতে করে ইরা উঠে যেতে চাইলে রোজা বলে
উঠে।
রোজাঃ আরেহ উঠছিস কেনো?
ইরাঃ উঠবো না তো কি করবো।
রোজাঃ আমি কি এমন করলাম।
ইরাঃ তোরা প্রেম করছিস বলে কি এখন আমাকে ওহ
করতে হবে?
নদীঃ দেখ, প্রেম করা কিন্তু সবার দ্বারা হয় না।
ইরাঃ তাই নাকি। আমি তোদের ২ দিনের ভিতরে প্রেম করে
দেখাবো।
নদীঃ যদি না পারিছ তাহলে কিন্তু তোকে পার্টি দিতে হবে৷
আর যদি না পারিছ তাহলে আমরা পার্টি দিবো৷
ইরাঃ ওকে ডান।
ওই দিন ইরা ওদের সাথে কথা বলে বাসায় ফিরছিলো।
যেতে যেতে ইরা তো ভাবছে কি করে প্রেম
করবে। কার সাথেই বা করবে। ইরার কিছুই মাথায় ডুকছে না, তাই
একমনে হেঁটে যাচ্ছে তখনই রাস্তার পাশে ইরা একটা
লোককে দেখতে পায়, গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে৷
ইরাঃ এই সুযোগ, ওই লোকটার ছবি তুলে নিয়ে ওদের
দেখাই৷ তাহলে ওরা বিশ্বাস করবে।
ইরার ছবি তুলে নিলো। পরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে ওর
বান্ধবীদের ছবি গুলো দেখায়৷ এরা ছবিটা দেখে বলে৷
রোজাঃ সত্যি, দোস্ত তোর বয়ফ্রেন্ড তো হেব্বি
নদীঃ কোই আমি ওহ দেখি৷
রোজাঃ এই নে ধর।
নদীঃ দোস্ত তুই আমার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে যা আর
তোর বয়ফ্রেন্ডকে আমাকে দিয়ে দে৷
ইরাঃ যাক বাবা ওরা তাহলে বিশ্বাস করেছে৷ এই সুযোগ একটা
পেয়েছি৷ ( মনে মনে)
নদীঃ কিহ ভাবছিস?
ইরাঃ ভাবছি তাহলে তোরা এভার পার্টি দেওয়ার আয়োজন কর।
তিন জন মিলে অনেক আনন্দ করবো।
নদীঃ দাঁড়া দাঁড়া আমরা তিন জন কোথায়৷
ইরাঃ তিন জন কোথায় মানে। এই তো.....
রোজাঃ পার্টিতে মোট.......................
লেখকঃ farvez_hosen_akash
Post a Comment